Thursday, 29 October 2015

ল’ইয়ার্স ধ্যান সাফারী, কোয়ান্টামম, লামা





ল’ইয়ার্স ধ্যান সাফারী, কোয়ান্টামম, লামা

                                                                              এডভোকেট এ.কে. এম.আমিন উদ্দিন (মানিক)
ঝিরি ঝর্ণা, চিঁ চিং ফাঁক ঝর্ণা স্্রষ্টার এক অপূর্ব সৃষ্টি পাহাড়ী এলাকাকে কোয়ান্টামম এর স্বপ্ন দ্রষ্টা গুরুজী শহীদ আল বোখারী মহাজাতক বৈজ্ঞানিক উপায়ে দর্শনীয়ভাবে সাজিয়েছেন। তিনি কোয়ান্টাম মেথডের উদ্ভাবক ও প্রশিক্ষক।  বন্ধুবর শামীম,  শিল্পি ও মাহফুজুর রহমানের অনুরোধে বান্দরবন জেলার পাহাড়ী এলাকা লামায় প্রতিষ্ঠিত  ল’ইয়ার্স  ধ্যান সাফারী, কোয়ান্টামম প্রোগ্রামে রওয়ানা দিলাম। ২১ অক্টোবর ২০১৫ খ্রীঃ রাত ১১ টায় ঢাকার কাকরাইস্থ  কোয়ান্টাম মেডিটেশন হল থেকে রওয়ানা দিলাম। বাসগুলো ছিল সৌদিয়া কোম্পানীর । রওয়ানা দেওযার পূর্বে আয়োজকরা ভ্রমণ সংক্রান্ত ব্রিফিং দিলেন । সাতটি বাস ও একটি মাইক্রোবাস সহকারে প্রায় ২৮৪ জনের মত আইনজীবী ও তাদের পরিবারবর্গ ল’ইয়ার্স মেডিয়েশন সোসাইটির উদ্যোগে এই কোয়ান্টামম ধ্যান সাফারী ভ্রমণ। ধ্যান সাফারী ভ্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মনির ভাই । প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপনায় ছিলেন  রফিকুল ইসলাম ও  কিশোর কুমার মন্ডল। হালকা চা-বিস্কিট খাওয়ার পর আমদের গাড়ীগুলো লামার উদ্দেশ্যে রওয়ান দিল। রাত ২ ঘটিকার সময় আমরা কুমিল্লা বিশ্বরোডস্থ হোটেল নুরজাহানে পৌঁছালাম। সেখানে দ্বিতীয় তলায় চাইনিজ অংশে রাতের খাবারের ব্যবস্থা আগেই করা ছিল। খাবারের তালিকায় ছিল সাদা ভাত,মুরগী, সবজি ও চা। রাতের খাওয়া শেষে আমরা পুনরায় রওয়ানা দিলাম। আমাদের গাড়ীটি ২২ অক্টোবর  সকাল ৭ ঘটিকায় কক্সবাজার রোডে লোহাগড়া  থানাধীন আদুনগর পৌঁছলো। সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষামান চান্দের গাড়ীতে করে কোয়ান্টামম-এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সকাল ৯ ঘটিকায় আমরা কোয়ান্টামম-তে পৌঁছালাম। সেখানে সালমাতানে সেবক বা খেদমতায়ন আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে  অপেক্ষা করছিল। বাসেই আমাদের আবাসন ব্যবস্থার স্লিপ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ‘সি’ গাড়ীটির সকলের আবাসনের নাম হলো “অতিসান”। অতিসান হলো একসাথে প্রায়  শতাধিক লোক থাকার জন্য মেঝেতে একটি গণবিছানা ।  আমরা অতিসানে পৌঁছে হাতমুখ ধুয়ে পাশেই দরবারান হলে সকালের নাস্তা খেতে গেলাম। দরবারানে প্রায় তিন শতাধিক লোকের একসাথে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। নাস্তার তালিকায় ছিল ডিম ও পাতলা খিজুরী ও রং চা। আবাসনের মধ্যে অন্য একটি ছিল “গিরিসান”, মহিলাদের জন্য ফাতিমান-১ ও ফাতিমান-২।  কয়েকটি বাস পেীঁছতে দুপুর হয়ে গেল। সে কারণে আমি, আলী সহ কয়েকজন পাশের গিরি রাহমাতান পাহাড়ে ওঠলাম । সেখানে ভি.আই.পি. গেষ্টদের থাকার আবাসন ‘বেহতারান’ অবস্থিত। অন্যপাশ দিয়ে নামার সময় ঝুলন্ত সেতু দিয়ে নামলাম। পাশেই দেখলাম গুরুজীর আবাসন মূখতারান । গুরুজী ১৯৯৮ সনে এখানেই প্রথম আসেন, ধ্যান করার জন্য। অনেক বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে মানবতা ও শৃংখলার এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত আজকের কোয়ান্টামম। এখনো তাঁর হাতে নির্মিত ছনের ঘর আজও বিদ্যমান। যাতে বিড়াল একপাশ দিয়ে ঢুকে অনায়াসে অন্যপাশ দিয়ে বের হতে পারে। মাসের অধিকাংশ সময় গুরুজী এই আবাসনেই থাকেন ও আধ্যাত্মিক ধ্যানে মগ্ন থাকেন। নামার সময় আরো পেলাম হাওয়া মঞ্চ । হাওয়া মঞ্চে বসলে বাতাসে গা জুড়িয়ে যায়। পরে  আমাদের পুরুষ সদস্যদেরকে সেবক ইঞ্জিনিয়ার আতিকের এর নির্দেশনায় ঝিরি ঝর্ণায় নিয়ে যাওয়া হলো আর মহিলাদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো চিঁ চিং ফাঁক ঝর্ণায়। সবার হাতে একটি করে লাঠি তুলে দেওযা হলো। ঝর্ণায় যাওয়ার পথে পানির গভীরতা ও পাহাড়ে ওঠতে শরীরের ভর রাখার জন্য লাঠির ব্যবস্থা। ঝর্ণার অপূর্ব নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে আমরা অভিভূত হয়ে যাই। স্্রষ্টার এক অপূর্ব সৃষ্টি। ঝর্নায় আমরা গোসল করলাম । সকলে মিলে ঝর্নার পানিতে শুয়ে পড়লাম। ভুলে গেলাম সকল ক্লান্তি। মনির ভাই আমাদেরকে কোয়ান্টাম ধ্যানে নিয়ে গেলেন কিছ্ক্ষুণ। হঠাৎ শুনা গেল মাহফুজুর রহমানের ছোট ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি সাফারি প্রোগ্রামে গিয়েছেন। আমরা সকলে টেনশনে পড়ে গেলাম। পরে জানা গেল সে আগেই আবাসনে চলে এসেছে। রবি সিম ছাড়া অন্য মোবাইলে নেটওয়ার্ক ছিল না,তবে পাহাড়ে ওঠলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। যাক  ঝিরি ঝর্ণা থেকে আবাসনে ফিরলাম দেড়টার দিকে। ফেরার পথে তোকমা-লেবুর সরবত ও চাপা কলার ব্যবস্থা ছিল । আবাসনে ফিরে গোসল করে দরবারানে দুপুরের খাবার খেলাম। খাবার তালিকায়  ছিল সাদা ভাত, ভেড়ার  মাংস, সবজি, ডাল ও রং চা।  তারপর কিছ্ক্ষুণ বিশ্রাম নিয়ে পাহাড়ের উপরে দেশের সর্বোচ্চ ষ্টেডিয়াম গ্রাউন্ড অলিম্পিয়ানে  আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানের শ্লোগান হলো অলিম্পিকে সোনা আমরাই  জিতবো।  সন্ধ্যার দিকে আমরা সেখান থেকে ফিরলাম। সন্ধ্যায় জিলাপি ও চা খাওয়ার পরে  আমাদের জন্য আয়োজিত উন্মুক্ত মঞ্চে কসমস স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও এ্যাক্রোবেটিক শো এর আয়োজন করা হলো। তারপর আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো ধ্যান ঘরে। ধ্যান ঘরে জানানো হলো গুরুজীর মাটির ব্যাংকের কাহিনী, যা দিয়ে চলে কোয়ান্টামম এর দুঃস্থ শিশুদের পড়াশুনাসহ লালন পালনের কাজ। আমরা সবাই অল্প অল্প করে দান করলাম। ধ্যান শেষে তারপর রাতের খাবার দরবারানে। খাবার তালিকা সাদা ভাত, তেলাপিয়া মাছ, সবজি ও ডাল। অনেকে মধ্যরাতে আরোগ্যশালার পাহাড়ে রাতের ধ্যানে  অংশ নিল । বিশাল আবাসনে আমরা সবাই গল্পগুজবে মেতে  উঠলাম। হুদা ভাই, দুলাল ভাই, সিরাজুস সালেকীন, জামাল ভাই, মহসিন ভাই, শোয়েব ভাই, বাতেন ভাই,ফারুক ভাই,  এনামুল , সুজন , আকাশ, মাযহার, জাকির, আযাদ, বিপ্লব, টিপু ,সায়েম সহ সকলে । রাতে হালকা শীত পড়লো,সবাই কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমালো। রাত ১২ টার দিকে আমার পাশের শোয়া রেজা ভাই এসে আমার ঘুম ভাঙ্গালে। সে আরোগ্যশালা থেকে আসার সময় রডের সাথে আঘাত লেগে পায়ে প্রচন্ড ব্যথা পেয়েছে। আমার সাথে থাকা একটি  প্যারাসিটামল ট্যাবলেট তাকে দিলাম। সকলে তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। অনেকে জোরে নাক ডাকছে। গভীর ঘুমের কারণে কেহ কারো নাক ডাকা শুনতে পাচ্ছে না। আমি ভাবলাম আমার বুঝি আর ঘুম আসবে না। কিন্তÍু  চোখ বন্ধ না করতেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙ্গলো সেবকের ঘন্টার ধ্বনিতে।  ২৩ অক্টোবর  সকালে ঘুম থেকে উঠে সবাই ফজরের নামাজ পড়লাম। তারপর আমাদের সকলকে নিয়ে রওয়ানা দেওয়া হলো কোয়ান্টামম এর বিভিন্ন স্থাপনা দেখানোর জন্য। একে একে পাহাড় অতিক্রম করে ছাগলের খামার বকরান, মৎস্য খামার মৎস্যায়ন, দুটি তার্কী মোরগ, মুরগী খামার, লিচু বাগানসহ নানাবিধ প্রকল্প। মৎস্যায়নের পাশে আমাদেরকে হালকা নাস্তা আপেল ও বেলা বিস্কিট খেতে দেওয়া হলো। তারপর অন্যান্য প্রজেক্ট দেখানোর পর আমাদেকে ভ্যালী কোরবান মাঠে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে কোয়ান্টামের উদ্যোগে প্রতিবছর গরীবদের মধ্যে কোরবানীর মাংস বিতরণ করা হতো। সর্বশেষ ২০১১ সনে ভ্যালী কোরবানে স্থানীয় ৯ হাজার পরিবারের মধ্যে ১৭ হাজার কেজি কুরবানীর মাংস বিতরণ করা হয়। এরপর কসমো স্কুলের নতুন স্থাপনার দরবারানে আমাদেরকে সকালের নাস্তা দেওয়া হলো। নাস্তার তালিকায় ছিল ডিম, পাতলা খিজুরী ও রং চা। তারপর আমাদেরকে কোয়ান্টামম এর আকর্ষণ ১০০০ ফুট উচ্চতায় আরোগ্যশালায়  নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে পানি পানে নানবিধ রোগ নিরাময়ের জনশ্রুতি আছে। সেখানে ধ্যান করানো হলো। এরপর দ্রুত ক্যাম্পে এসে কাপড় পরিবর্তন করে পুরুষদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো চিঁ চিং ফাঁক ঝরণায় আর মেয়েদেরকে আবে কুদরত ঝিরি ঝরণায়। সেখানে চিঁ চিং ফাঁক ঝরণায় পরমকরুণাময় আল্লাহতালার কি অপার সৃষ্টি, মুগ্ধ হয়ে দেখলাম আর ঝরণার পানিতে ডুব দিয়ে গোসল করলাম। অনেকে পাহাড়ের পা থেকে সুন্দর হওয়ার  আশায় মুখে ও শরীরে  মুলতানী মাটি মাখলো । শুক্রবার জুমার নামাজ বিধায় সেখান থেকে আমরা তাড়াতাড়ি আবাসনে ফিরে আসলাম। আসার পথে তোকমা-লেবুর সরবত ও পাহাড়ী চাপা কলা। দ্রুত গোসল করে জুমার নামাজ পড়তে গেলাম । এই মসজিদটি পরে নবীর মসজিদের আদলে নির্মাণ করা হবে আমাদেরকে জানানো হলো। নামাজ শেষে দরবারানে দুপুরের খাবার । খাবার তালিকায় ছিল সাদা ভাত, মুরগীর মাংস, শুটকী ভর্তা, সবজি,ডাল ও রং চা। বিকালে আমাদের সৌজন্যে কসমো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আকর্ষণীয় প্যারেড ও ডিসপ্লে। কসমো স্কুল এন্ড কলেজ ২০১৫ সনে প্রথম বারের মত ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়ামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে  স্বাধীনতা দিবসের কুঁচকাওয়াজে অংশ গ্রহন করে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল। এই স্কুলে দুঃস্থ শিশুদেরকে পড়ানো হয়। প্রথমে সাত জন ছাত্র নিয়ে স্কুলটির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ১০০০ জন ছাত্র-ছাত্রী। প্রায় ২০টি  বিভিন্ন ধর্ম, গোত্র, বর্ণের দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দুঃস্থ শিশুদেরকে অত্র স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। মানবতার এক অপূর্ব কর্মশালা। অত্র স্কুলের ছেলে-মেয়েরা ইতিমধ্যে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছে। একজন মেডিক্যাল ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে  পড়ছে একজন। একজন আই.টি. নিয়ে পড়ছে। এবার দুইজন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তির সুযোগ পেয়েছে। কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তোলা হচ্ছে। প্যারেড ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠান শেষে  সন্ধ্যায় আবার ধ্যান করে বিদায় অনুষ্ঠানের পালা। মনির ভাইয়ের উপস্থাপনায় অনেকে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করলো। মনির ভাই সবাইকে জিজ্ঞাসা করলো আপনারা কেমন আছেন? সবাই বললো শোকর আলহাম্দুল্লিলাহ বেশ ভাল আছি। যা কোয়ান্টামের  একটি অটোসাজেশন ।  খোলা হলো মাটির ব্যাংক, আমাদের দানকৃত টাকার পরিমাণ জানানো হলো উনত্রিশ হাজার একশত টাকা।  আরেকটি কথা আমাদের মধ্যে বিশেষ আলোচনার খোরাক জমিয়েছিল, বিষয ছিল আয়ন শব্দ যোগ করে সবকিছুর নামকরণ। আমরা যে যেই ভাবে পারছি আয়ন শব্দ যোগ কথা বলা শুরু করলাম।  আমার পালা এসেছিল প্রথম বক্তা হিসেবে। সেখানে নানা রকম পিঠা, আপেল ও রং চা খওায়ানো হলো। এর পর ফেরার পালা। আবার চান্দের গাড়ীতে  করে আদুনগর আসা এবং রাত সাড়ে ১০টায় সৌদিয়া বাস যোগে ঢাকায় রওয়ানা দিলাম। রাত ১ টায় চট্রগ্রাম এসে জামান এন্ড রেষ্টুরেন্টে রাতের খাবার। খাবার তালিকায় ছিল, সাদা ভাত, মুরগীর মাংস, সবজি ও কফি। ২৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৬ টায় আমরা ঢাকায় এসে পৌঁছালাম। অনেক আনন্দের ভ্রমণ হয়েছে। প্রাকৃতিক পাহাড় কেটে নিজ হাতে সবুজ বনায়ন সৃষ্টি ও মানবতার আদর্শে দুঃস্থ শিশুদেরকে মানুষের মত মানুষ করার এক সুমহান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন গুরুজী। পুরো কোয়ান্টামম এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে শিল্পকর্মের নানা সমাহার। হাতী,বাঘ, হরিণ, মহিষের অসংখ্য ভাস্কর্য সৃজন করা হয়েছে। চাপ কল গুলো দিয়ে পানি পড়ছে। সব ঘরে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা । সবকিছু মিলিয়ে এক অনিন্দ্য সুন্দর দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে কোয়ান্টামম ।

No comments:

Post a Comment