এস.এম. নূর আলম, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
এডভোকেট এ.কে.এম. আমিন উদ্দিন(মানিক)
জাতির জনকের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ মঞ্চের কাছাকাছি থেকে শ্রবণকারী, একজন সাদা মনের পরিছন্ন আইনজীবী ।
সাং- বাড়ি-১৪, রোড-২, ব্লক-এ, সেকশন-৬,মিরপুর,ঢাকা-১২১৬ । বর্তমানে, ৩৩,জনসন রোড,৩য় তলা, থানা- সূত্রাপুর,ঢাকা-১১০০ ।
জন্ম ১ ডিসেম্বর ১৯৫২ খ্রীঃ । পিতা প্রকাশনী ব্যবসায়ী মরহুম হাজী এস.এম. আবদুর রহমান, মাতার নাম হাজীবেগম ফাতেমা, মায়ের বয়স ৭২ বৎসর,আল্লাহর বহমতে সুস্থ্য আছেন, তবে স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙ্গে পড়েছেন । । ৫ ভাই ৩ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড় ।
তিনি প্রগোজ হাই স্কুলে সরাসরি ৩য় শ্রেণিতে ভর্ত্তি হয়ে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন । পরে ১৯৬৮ সনে গেন্ডারিয়া হাই স্কুল থেকে এস.এস.সি. পাশ করেন । ’৭০ সনে তৎকালীন কায়দে আজম কলেজ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দ্দী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন । ’৭২ সনে একই কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ করেন । ’৭৮ সনে সিটি ল’ কলেজ থেকে এল.এল.বি পাশ করেন ।
তিনি ২২ আগষ্ট ’৮১ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ নিয়ে ২৯ আগষ্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করেন । ১৭ জুলাই ’৯৩ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্র্যাকটিসের অনুমতি প্রাপ্ত হন এবং ১২ জুলাই ’৯৪ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করেন ।
তিনি ৯ম শ্রেণি থেকে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন । তখনকার ছাত্রনেতা আল মুজাহিদের নেতৃত্বে পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন । ’৭০ সনে কায়দে আজম কলেজ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দ্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ।
তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিন কলতা বাজার থেকে মিছিল সহকারে রেসকোর্স ময়দানে গিয়েছিলেন । মঞ্চের কাছাকাছি থেকে পুরো বক্তব্য শুনেছিলেন । বঙ্গবন্ধু “জয় বাংলা” বলে বক্তব্য শেষ করেছেন তা এখনও কানে বাজে । ’৬২ সনে আইয়ুব খানের শিক্ষা কমিশন বাতিলের আন্দোলনে ,৬৬ সনের ৬ দফা আন্দোলনে ও ’৬৯ সনের গনঅভ্যূথানে সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন । ’৬২ সনে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে মিছিলে হঠাৎ করে পাকিস্তানী পুলিশ গুলি চালালে ট্রেজারী বিল্ডিংয়ের সামনে ২ জন ছাত্র মারা যায় ।
তখন বঙ্গবন্ধর সাথে পল্টনের আওয়ামীলীগের অফিসে প্রায়ই সাক্ষাত হতো । বঙ্গবন্ধু তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন ও নাম ধরে ডাকতেন । বঙ্গবন্ধু সব সময় আদর ও কোলাকুলি করতেন । তিনি অনেক সময় বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেছেন বলে জানান । একবার বঙ্গবন্ধু কলতা বাজারস্থ লাট মিয়ার ৯৯/৬ নাসির উদ্দিন সর্দার রোডে পুরীর দোকানে বসলে লোকজন নিয়ে সাক্ষাত করেছেন বলে জানান । মিন্টু রোডের বাস ভবনে জাতির জনকের সাথে কয়েকবার সাক্ষাত করেছেন । মুক্তিযুদ্ধের সময তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সরাবরাহের দায়িত্ব পালন করেন ।
স্বাধীনতা পরবর্তী রোকনপুর ইউনিয়নের ৫নং ইউনিট কলতাবাজার এলাকার, বর্তমানে ৪২নং ওয়ার্ড,ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের কার্য্যকরী পরিষদের সদস্য ছিলেন । পরে বাকশাল সৃষ্টি হলে তিনি প্রয়াত নেতা আবদুর রাজ্জাকের সাথে বাকশালের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন । পর্যায়ক্রমে তিনি বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন । বাকশাল বিলুপ্ত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাথে একীভূত হলে তিনিও আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ফেরৎ আসেন । রোকনপুর ইউনিয়ন পরে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৪২নং ওয়ার্ড এরপর ৭৮নং ওয়ার্ড এবং পুনরায় ৪২নং ওয়ার্ড দক্ষিণের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ২০ মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত । বর্তমানে সম্মেলনের পর নতুন কমিটি এখনও প্রদান করা হয়নি ।
তিনি সূত্রাপুর থানা মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের আহবায়ক ছিলেন , ঘাতক-দালাল নির্মূল ও প্রতিরোধ জাতীয় সমন্বয় পরিষদের সূত্রাপুর থানার আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন । পাকিস্তান দালাল প্রতিরোধ কেন্দ্রীয় কামটির আহবায়ক ছিলেন ।
তিনি এশিয়ার বৃহত্তম বার ঢাকা আইনজীবী সমিতির ’৮৫ সনে কার্য্যকরী পরিষদের সদস্য ও ২০১০ সনে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন । ভবিষ্যতে মনোয়ন পেলে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে ।
তিনি ঢাকার কলতাবাজারস্থ রেঞ্জার্স স্পোটিং ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে আছেন । দেশ স্বাধীনের পর ঢাকা ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহিত জড়িত ছিলেন । মিরপুরস্থিত বায়তুল মোশাররফ মসজিদ ও মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির আইন উপদেষ্টা হিসাবে আছেন । ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও রাজউকের প্যানেল আইনজীবী ছিলেন । বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাথে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত আছেন ।
তিনি ভারতের দিল্লী, বোম্বাই, আজমীর শরিফ, কলিকাতা,মালদা ভ্রমণ ও আগ্রার তাজমহল পরিদর্শন করেছেন । সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, মালয়েশিয়া বেড়াতে গিয়েছেন । সাংগঠনিক, ব্যক্তিগত কাজ ও বেড়াতে দেশের প্রতিটি জেলা সফর করেছেন ।
তিনি ’৮৪ সনের ২৫ অক্টোবর ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মরহুম মাহতাব উদ্দিন আহমেদের মেয়ে আফরোজা বেগমকে বিয়ে করেন । মিসেস নূর আলম ঢাকার বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয় ও ইডেন কলেজে পড়ার সময় এ্যাথলেট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ও ছাত্রী অবস্থায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নৌকাবাইচেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক । ১. ছেলে- এস.এম.আনিসুল আলম প্রিন্স একজন ব্যবসায়ী , সে বিবাহিত । ২. মেয়ে- নুরজাহান প্রিয়া এল.এল.বি(অনার্স) শেষ বর্ষে আছে । প্রিয়ার স্বামী শেখ মোহাম্মদ আলী ইংরেজীতে অনার্স করে বর্তমানে ব্যবসা করছেন ।
বঙ্গবন্ধু প্রেমিক এই আইনজীবী হৃদয়ের টানে টুঙ্গিপাড়া জাতির জনকের সমাধিতে এ পর্যন্ত ৭ বার গিয়েছেন । সবসময় যেতে ইচ্ছা করে । তিনি একজন সাদা মনের পরিছন্ন, অনুকরণীয় আইনজীবী । আইনপেশায় সিভিল, ক্রিমিনাল ও কোম্পানী ম্যাটারে কাজ করেন । এই পর্যন্ত ২০ জন জুনিয়র তাঁর সাথে কাজ শিখে স্বতন্ত্রভাবে আইনপেশায় নিয়োজিত আছে ।
সাক্ষাৎকারটি ১৬ অক্টোবর ২০১৪ গৃহিত ।

No comments:
Post a Comment