ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলামের নির্বাচনী ইশতেহার
এডভোকেট এ.কে.এম.আমিন উদ্দিন (মানিক)
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন-২০১৫
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম.আমীর-উল ইসলামের আহবান
আসন্ন বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণার মুহুর্তে এদেশের আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাথে জড়িয়ে থাকা অনেক প্রতিথযশা আইনজীবীগণের অম্লান স্মৃতি ভেসে উঠছে। ডঃ আলীম আল-রাজী, শামসুল হক চৌধুরী, সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, ব্যারিস্টার শওকত আলী খান, কাজী গোলাম মাহবুব, গাজীউল হক, আমিনুল হক, সুধাংশু শেখর হালদার, অনিল কুমার সাহা, আফতাব উদ্দিন ভূঞা, আবদুস সালাম তালুকদার, সৈয়দ আহমেদ, ব্যারিস্টার এস সি দাস, মোঃ ওজায়ের ফারখ, দেওয়ান আবুল আব্বাস, ফয়জুর রহমান খান, রমজান আলী খান, এ.কে.এম. মোমতাজ উদ্দিন, আলতাব হোসেন ভান্ডারী, আব্দুস সবুর আশরাফি প্রমুখ, আইনজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আইনজীবীদের সংগ্রাম ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের পথ অনুসরণ করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সমন্বয় পরিষদ আইনজীবীদের ঐক্যকে অটুট রাখার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সংবিধানের সার্বভৌমত্ব নিরঙ্কুশ রাখা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের দাযিত্ব অপরিসীম। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিচারের মান সমুন্নত রাখার পাশাপাশি নিষ্কলুষ বিচারাঙ্গণ প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা অপরিহার্য। তাই দলমত নির্বিশেষে এই মৌলিক বিষয়ে আইনজীবীদের ঐক্যমত ও নিষ্ঠাবান থাকার কোন বিকল্প নেই।
হত্যা-সন্ত্রাস ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রয়াসে আইনজীবীদের সুদৃঢ় ঐক্য ও মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে সন্ত্রাস ও দূর্নীতিমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক সমাজ। এমন একটি কল্যাণমুখী ন্যায়ানুগ সমাজ গঠনে আইনজীবীদের ঐক্য, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদকে বারংবার বিজয়ী করেছে। এজন্য আপনাদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। বার কাউন্সিলকে আরো গণতান্ত্রিক করার জন্য সরাসরি ভোটের মাধ্যমে বার কাউন্সিলের সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, বার কাউন্সিলের ভবন ও গেস্ট হাউজের শ্রী বৃদ্ধি, মান উপযোগী নতুন গেস্ট হাউজ তৈরী করা, ক্যান্টিনে মান সম্মত খাবার পরিবেশন করা, বি.এল.ডি’র গুণগত মান উন্নয়ন করা, আইনজীবীদের জীবিত অবস্থায় বেনিভোলেন্ট ফান্ডের সুবিধা দানের বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়া এবং এসব ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা সময়ের জরুরী প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়ে আইনজীবীদের শপথ পাঠ পূর্বক আনুষ্ঠানিকভাবে সদন বিতরনের ধারা গত পাঁচ বছর ধরে ভঙ্গ করা হয়েছে। ভোটের আগে গত ২রা মে ২০১৫ তারিখে ৫ বছর পরে শপথ পাঠ ও সনদ বিতরণের মাধ্যমে ভোটের রাজনীতি করেছে কিন্তু আইনানুগ পদ্ধতি ভঙ্গ করে নবীন আইনজীবীদের শপথ গ্রহণ ও সনদ বিতরণে পাঁচ বছরের বন্ধ্যাত্বের এবং নিয়ম ভঙ্গের জবাব দেবে কে? বর্তমান পরিষদ তাদের কার্যকালে বাৎসরিক সাধারণ সভা করেনি। হিসাব বিবরণীসহ কোন বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হযনি। অতীতের আইনানুগ পালনীয় সকল ঐতিহ্য ভঙ্গ করে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে কাউন্সিলের কর্মকর্তাগণ একটি ত্রুটিমুক্ত ভোটার লিস্ট দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে মিথ্যা ও একাধিক ভোট দেবার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। আমাদের বলতে দ্বিধা নেই গত ৩ (তিন) বছরেও জেলা বারের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কোন বর্ধিত সভা হয়নি। ফলে আইনজীবীদের বহুমুখী সমস্যা আরও পুঞ্জিভূত হয়েছে। আইন শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং পেশার পরিধি বিস্তৃত করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান ও মানবাধিকার বাস্তবায়নে বার কাউন্সিলের ভূমিকা সুদৃঢ় করতে পরিষদ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অঙ্গীকার ও ১২ দফা কর্মসূচী নি¤েœ তুলে ধরা হলো।
এসকল কার্য-প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে দলমত নির্বিশেষে সকল আইনজীবীদের দোয়া, সমর্থন ও শুভেচ্ছা আমাদের চলার পথে সবচেয়ে বড় পাথেয়। এই চলমান ঐক্যের ধারাবাহিকতাকে অটুট রাখতে প্রতিটি বার সমিতির নেতা, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সকল আইনজীবী বন্ধুগণের সহায়তায় ও পরামর্শ আমাদের চলার পথকে সুগম করবে। আপনাদের অকৃত্রিম ও সার্বিক-সমর্থন এবং সহায়তা সমন্বয় পরিষদের সফলতার মূল ভিত্তি। এবারও সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সংকল্পের উপর রয়েছে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আপনাদের ঐক্য ও আন্তরিকতা আমাদের বিজয়কে শুনিশ্চিত করবে। এই প্রত্যাশা রেখে আপনাদের জন্য রইলো আমার আকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। আপনাদের এবং পরিবারের সকলের জন্য নিজ নিজ ক্ষেত্রে সলফতা ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
আপনাদের একান্তই-
এম. আমীর-উল ইসলাম
আহবায়ক
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন-২০১৫
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এর অঙ্গীকার ও কর্মসূচী
বার কাউন্সিলের ঐতিহ্যময় ভূমিকার ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আমরা সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ঐক্যবদ্ধভাবে আসন্ন বার কাউন্সিল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার লক্ষ্যে নি¤œ লিখিত অঙ্গীকার ও কর্মসূচী তুলে ধরছি ঃ-
১। (ক) কলুষমুক্ত বিচারাঙ্গণ সৃষ্টির লক্ষ্যে আইনজীবী ও বিচারকদের একত্রে কাজ করা এবং একে অপরের পরিপূরক হয়ে সৎ ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের স্বার্থে সংবিধানিক শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।
(খ) উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগকে আরো স্বচ্ছ ও মান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বিচারক নিয়োগে যেসব রীতি নীতি বলবৎ রয়েছে তার নিরিখে গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে সৎ, যোগ্য, মেধা ও মনন সম্পন্ন উপযুক্ত বিচারক নিয়োগের মাপকাঠি নিরুপন সহ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫(গ) এর অধীনে একটি সর্বাঙ্গীন আইন প্রনয়ন অতীব জরুরী বিধায় এমন একটি আইন প্রনয়নের দাবী উত্থাপন করা হচ্ছে।
(গ) জেলা বারে পেশায় নিয়োজত আইনজীবীদের জন্য নিু আদালতে বিচারক নিয়োগের পদ্ধতি একইভাবে প্রয়োগ করতে হবে। অন্তত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা, সৎ এবং সুনামের সহিত পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিক তালিকা তৈরির মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ এবং নিু আদালতের বিচারকদের বয়স সীমা সমভাবে পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
(ঘ) জীবিত অবস্থায় আইনজীবীদের জন্য বেনাভোলেন্ট ফান্ডের সুবিধা ভোগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারী আনুকূল্য লাভের ক্ষেত্রে বাৎসরিক মোট কোর্ট ফি মারফত সরকারী আয়ের উৎস থেকে নির্ধারিত একটি ক্ষুদ্র অংশ যথা .০৫% এই বেনাভোলেন্ট ফান্ডে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবী জানানো হচ্ছে।
২। বার কাউন্সিলকে পরিপূর্ণ ভাবে একটি গণতান্ত্রিক এবং স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিুলিখিত আইনি সংষ্কার একান্তই অপরিহার্য ঃ
(ক) বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে।
(খ) আইনজীবীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এখন প্রায় ৫০,০০০ এ দাঁড়িয়েছে। অথচ বার কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা নির্বাচিত আসন সংখ্যা ৭০ দশকে নির্ধারিত ১৪ জনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিভিন্ন কমিটি ও ট্রাইবুনাল গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ সদস্যের স্বল্পতা বার কাউন্সিলের বিস্তৃত কর্মকান্ডে উপযুক্ত সদস্য সংখ্যার স্বল্পতা একটি বড় অন্তরায়। তাই সদস্য সংখ্যা অন্ততঃ ২৫ জন হওয়া সময়ের জরুরী প্রয়োজন। শুধুমাত্র ঢাকা বার সমিতির সদস্য সংখ্যা বিশ হাজারের উর্দ্ধে। তাই বার কাউন্সিলে বর্তমানে জাতীয় সাতটি আসনের সাথে ঢাকা বারের জন্য আর একটি বিশেষ আসন সংরক্ষিত রাখা সময়ের দাবী।
৩। (ক) স্থাবর সম্পত্তি হন্তান্তরের ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে দলিল প্রস্তুতকরনের জন্য একজন Conveyancing এ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আইনজীবীর মতমাত সম্বলিত সনদ বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। সেই সাথে Conveyancing ও কোম্পানী আইনে পারদর্শীতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান অতীব জরুরী পদক্ষেপ হিসাবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। কোম্পানী নিবন্ধিকরনের জন্য Memorandum and Articles of Association এর সঙ্গে কোম্পানী বিষয়ক আইনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আইনজীবীর সনদপত্র সংযুক্তি আইনতঃ বাধ্যতামূলক করার জন্য আইনী সংষ্কারের দাবী জানানো হচ্ছে।
(খ) Tort মামলা দায়েরের জন্য কোনও কোর্ট ফির প্রয়োজন হবে না মর্মে আইন সংশোধন প্রয়োজন। জনজীবনের সকল পর্যায়ে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করনের জন্য Tort মামলা সম্পর্কিত আইনী প্রশিক্ষগণের মাধ্যমে জনস্বার্থে মামলার পাশাপাশি negligence এর ফলে ক্ষতিসাধন হলে তার জন্য ক্ষতিপূরণ মামলায় আইনজীবীরা নগারিকদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে পেশাগত জ্ঞান কাজে লাগাতে পারলে নাগরিক দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইন পেশার উৎকৃষ্ট সাধন সম্ভব হবে।
৪। (ক) আইনজীবীদের পেশার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সক্রিয় ভূমিকা ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারী এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও আইন কলেজে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে কার্যকর সহযোগিতা দানে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
(খ) আইনজীবীদের পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্সের পাশাপাশি চলমান পেশাগত উৎকৃর্ষ সাধনের লক্ষ্যে Ethics, Conveyancing, Tort আইন ও অন্যান্য বিষয় যেমন ‘পেটেন্ট এন্ড ট্রেডমার্ক’, লেবার ‘ল’ `Taxes Law' উত্তরাধিকার আইন, কোম্পানী আইন, মানবাধিকার, সাংবিধানিক আইন, নারী ও শিশু বিষয়ক আইন, ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ’ এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এ-ডি-আর) বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করা আবশ্যক।
৫। (ক) বার কাউন্সিল দ্বারা অনুষ্ঠিত পরীক্ষা পদ্ধতির মান, স্বচ্ছতা ও উৎকর্ষ সাধন এবং পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে যথা সম্ভব স্বল্প সময়ে ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং বার কাউন্সিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বারের সদস্য হওয়ার আগেই বিদ্যমান আইনানুগ শপথের মাধ্যমে সনদ দিতে হবে। গত পাঁচ বছর এই আইনানুগ পদ্ধতি অনুসরণ না করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত ২রা মে, ২০১৫ তারিখে পবিত্র শপথ অনুষ্ঠানকে একটি নির্বাচনী প্রচারনায় রূপ দেওয়া খুবই গর্হিত কাজের মধ্যে পড়ে। এসব রীতি বহির্ভূত কাজের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য প্রতিটি আইনজীবীকে সতর্ক থাকতে হবে।
(খ) বার কাউন্সিলের নতুন ভবন নির্মানের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ ও সাথে সাথে বার কাউন্সিলের web site ও পাবলিকশনস কে আরো সমৃদ্ধ ও সক্রিয় করে গড়ে তুলতে হবে। গত তিন বছরে এসব বিষয়ে আইনজীবীগণ প্রচন্ডভাবে অবহেলিত হয়েছেন।
(গ) বার কাউন্সিলের মানবাধিকার কমিটিকে প্রতিটি বার সমিতির সাথে সক্রিয় ও কার্যকর যোগাযোগের ভিত্তিতে দেশব্যাপী মানবাধিকার আন্দোলনকে দিক নির্দেশনামূলক কাজে ও মাঠ পর্যায়ে সহায়তা দান অব্যাহত রাখতে হবে। গত তিন বছর এসব বিষয়ে বার কাউন্সিলের সদস্যদের চরম অবহেলা দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যকে ম্লান করেছে।
(ঘ) বিজ্ঞ আইনজীবীদের জন্য বার কাউন্সিলে একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও উন্নত পরিবেশ সম্পন্ন রেস্ট হাউজ ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারী সাহায্য নিশ্চিত করতে হবে।
(ঙ) সমগ্র বাংলাদেশে আজ আইনজীবীদের সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার, যা সময়ের পরিক্রমায় আরো বেড়ে যাবে। এই ক্রমবর্ধমান বিশাল আইনজীবী পরিবারের পেশাগত উৎকর্ষ সাধন, মান উন্নয়ন এবং সময়ের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে ধারাবাহিক কর্মযজ্ঞ সূচারুরূপে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকবল ও বৃহত্তর অফিস অবয়ব সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই।
(চ) বেনিভোলেন্ট ফান্ডের উন্নয়নসহ সকল উন্নয়ন কর্ম সুচারুরূপে পালনের লক্ষ্যে সকল বারের সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। বার কাউন্সিল বছরে অন্তত দুইবার সকল বারের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারী সহ বর্ধিত সভার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম পুনঃস্থাপন করতে হবে। মানসম্মত বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের নিয়ম ও প্রথা পুনরায় চালু করতে হবে। (গত পাঁচ বছরে এসব অবশ্য করণীয় নিয়ম ও রীতি অনুসরণ না করায় বার কাউন্সিল তাদের কর্তব্য পালনে নিঃসন্দেহে পিছিয়ে পড়েছে)।
(ছ) বার কাউন্সিলের গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিটি আইনজীবীর সার্বিক সমর্থন ও সক্রিয় ভূমিকা পালনের কোন বিকল্প নেই।
৬। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাশ করবেন বা করেছেন এ্যাডভোকেট তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে সমস্ত অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। বয়সের মাপকাঠির ইস্যু তুলে এ্যাডভোকেট তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে কোনক্রমেই অবিচার করা হবে না বরং মেধার মাপকাঠিতে তাদের তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।
৭। যে সমস্ত বিজ্ঞ আইনজীবী বিরতিহীনভাবে ৪৫ বছর আইন পেশায় নিয়োজিত থাকবেন তাদের সনদ Surrender না করেই পূর্ণ Benefit দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
৮। যে সমস্ত বিজ্ঞ আইনজীবী একাধারে ২০ বছর নিু আদালতে পেশায় নিয়োজিত আছেন তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে হাইকোর্ট পারমিশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুবধা প্রদান করা হবে।
৯। বার কাউন্সিলকে কখনোই রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না । দূর-দূরান্ত থেকে অনেক বিজ্ঞ আইনজীবীরা এসে গেস্টহাউজে স্থান পান না অথচ গেস্টহাউজ অবাঞ্ছিত ব্যক্তি বা রাজনৈতিক ক্যাডারদের রাত্রি যাপনের বিষয়টি বিপুলভাবে নিন্দিত হচ্ছে। বার কাউন্সিলের এরূপ বেআইনী কর্মকান্ড অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
১০। ডিজিটাইজেশনের যুগে বার কাউন্সিল চলছে এনালগ পদ্ধতিতে, যার দরুণ ভোটার লিস্টে ভোটারের নামের একাধিক জায়গায় এবং মৃত আইনজীবীদের নাম সন্নিবেশিত রয়েছে। এমনকি বার কাউন্সিলের চাঁদা পরিশোধ করার পরও অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আমরা নির্বাচিত হলে সংশ্লিষ্ট বারে বসে বা মোবাইলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের চাঁদা পরিশোধের তথ্যাদি জানতে পারার প্রযুক্তি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
১১। যে সমস্ত বিজ্ঞ আইনজীবী পিপি, জিপি, স্পেশাল পিপি, এজিপি, এপিপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন L.R.Manual এ তাঁদের Status সুস্পষ্ট নয় এবং মান্ধাত্বা আমলের দৈনিক ২৫০ টাকা এবং ২০০ টাকা হারে Retainer Fee গ্রহণ করে চলছেন। আমরা নির্বাচিত হলে সরকারের সাথে আলোচনাক্রমে সময়োপযোগী দৈনিক ৩০০০ টাকা এবং ২০০০ টাকা হারে Retainer Fee ধার্য করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১২। বিজ্ঞ আইনজীবীদের প্র্যাকটিসের বহুমুখী ক্ষেত্র সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত হলে ‘ল’ রিফর্ম কমিটি গঠন পুর্বক প্র্যাকটিসের নতুন নতুন ক্ষেত্র এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

No comments:
Post a Comment