এডভোকেট এ. কে.এম. সিরাজুল ইসলাম
এডভোকেট এ.কে.এম.আমিন উদ্দিন (মানিক)
আমার সেজো ভাই । জন্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৬২। পিতা- মরহুম হাজী সামছল হক ( অবঃ প্রাপ্ত মহকুমা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ), মাতা- মরহুমা হাজী আমেনা খাতুন, স্থায়ী ঠিকানা- খোকন চেয়ারম্যান বাড়ি, ৫নং ওয়ার্ড, বসুরহাট পৌরসভা, উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী ।
বর্তমানে মাইজদীতে বাড়ী করেছেন,শামীম ভবন,নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রোড়(ছাবিদ মিয়া রোড), মাইজদী,নোয়াখালী । চেম্বার: সমাধান “ল” চেম্বার,নোয়াখালী আইনজীবী সমিতি ভবন,২য় তলা,রুম নং-২০৮।
বসুরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ১৯৭১ সনে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন । ’৭১ সনে পাকহানাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলে ’৭২ সনে স্বাধীন বাংলাদেশে সকল ক্লাশে অটো প্রমোশনের ব্যবস্থা করা হয় । তিনি অটো প্রমোশন নেননি। তিনি আব্বার চাকুরীর সুবাধে চট্রগ্রাম শহরে পাঠানতুলী খান সাহেব বয়েস ফ্রি প্রাইমারী স্কুলে ৫ম শ্রেণিতে ভর্ত্তি হন । ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর ’৭৩ সনে চট্রগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্ত্তি হন । ’৭৮ সনে কলেজিয়েট স্কুল থেকে মানবিক বিভাগে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এস.এস.সি পাশ করেন । তিনি ’৮০ সনে চট্রগ্রাম সরকারী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে চট্রগ্রাম বোর্ডের অধীনে এইচ.এস.সি পাশ করেন । এরপর আব্বা চাঁদপুর মহকুমা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে পোষ্টিং পেলে সেজো ভাই চাঁদপুর সরকারী কলেজে ’৮০ সনে বি.এ. ভর্ত্তি হন এবং ’৮২ সনে চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে বি.এ. পাশ করেন । তিনি ’৮৩ সনে ঢাকায় সেন্ট্রাল ল’ কলেজে ভর্ত্তি হন এবং ’৮৬ সনে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে তিনি এলএল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন । ’৮৭ সনে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ভূক্ত হয়ে ৮ নভেম্বর ’৮৭ সনে নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ গ্রহণ করেন । এরপর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কোর্টে আইনব্যবসা শুরু করেন । বাড়ির কাছেই কোর্ট । সকালে বাড়িতে নাস্তা করে বসুরহাট বাজার ফেরিয়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে কোর্টে যেতেন । সেখানে স্বতন্ত্রভাবে প্র্যাকটিস শুরু করে অল্পদিনের মধ্যে পেশার প্রসার ঘটাতে সক্ষম হন । বড় ভাই মরহম আমিরুল ইসলাম খোকন তখন চরপার্ব্বতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন । আর বসুরহাট বাজারটা চরপার্ব্বতী ইউনিয়নের মধ্যে ছিল । সেই প্রভাবও কিছুটা পেয়েছেন । বর্তমানে বসুরহাট একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা । মরহুম খোকন ভাই বসুহাট পৌরসভার প্রথম পৌরপ্রশাসক ছিলেন । সেজো ভাই ’৮৭ সন থেকে ’৯২ সন পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্র্যাকটিস করেন ।
উপজেলা কোর্ট ওঠে গেলে তিনি নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদিতে প্র্যাকটিস শুরু করেন । ক্রমান্বয়ে তিনি শুধুমাত্র দেওয়ানী প্রকৃতির মামলা করেন এবং বর্তমানে একজন ভাল সিভিল ল’ ইয়ার হিসাবে নোয়াখালীতে যথেষ্ঠ সুনামের সহিত আইন ব্যবসা পরিচালনা করছেন । তিনি ২০০৭ থেকে ২০০৮ সন পর্যন্ত নোয়াখালী জেলা জজ আদালতে জি.পি- এর দায়িত্ব পালন করেন । নোয়াখালী আইনজীবী সমিতিতে তিনি সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন । বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নোয়াখালী জেলা শাখার সক্রিয় সদস্য ।
তিনি ২৩ অক্টোবর ’৮৯ সনে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার চরপার্ব্বতী নিবাসী মোঃ আমানত উল্যা অবসর প্রাপ্ত আই.আর.ও (ডিভিশনাল ইনসপেক্টর অব রেজিষ্টেশন অফিসার) এর ২য় মেয়ে ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রলালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নী শামীমা আক্তারকে বিয়ে করেন । শামীম ভাবী নোয়াখালী সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন । স্কুল জীবনে বসরুহাট সরকারী হাই স্কুলে সব সময় প্রথম হওয়া ভাবীর ইন্টারমিডিয়েটের সময় বিয়ে হলেও সংসার করার পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যান । বর্তমানে জয়নুল আবেদীন মেমোরিয়াল একাডেমী,বেগমগঞ্জে শিক্ষকতা করছেন ।
সিরাজ ভাইয়ের এক ছেলে এক মেয়ে । ১. ছেলে- এ.কে.এম. মাহীদুল ইসলাম শুভ, যুক্তরাজ্যের অধীনে নিউক্যাসল ল’ কলেজ, ঢাকা থেকে এলএল.বি(অনার্স) পাশ করেছে । লন্ডনে গিয়ে বার-এট- ল’ করার অপেক্ষায় আছে । ২.মেয়ে- মাহিয়া ফারচুম ইসলাম জাসিয়া, নোয়াখালী গালর্স স্কুল থেকে ৮ম শ্রেণির জে.এস.সি. পরীক্ষা দিচ্ছে ।
সিরাজ ভাই একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি । আব্বার চাকুরী জীবনে তিনি সবসময় কাছাকাছি ছিলেন । দীর্ঘদিন বাড়ির সম্পত্তি দেখাশুনাও করে আসছেন । ভাই-বোনদের সবার বিপদে-আপদেও সবসময় এগিয়ে এসেছেন । তিনি সবসময় নিয়মের মধ্যে থেকে চলার পক্ষপাতী । তিনি একজন প্রচার বিমূখ স্বভাবের,গোপনে কাজ করে যেতে বিশ^াসী।
তিনি একজন ভাল সংগঠক । ল’ পাশ করার পর বসুরহাটে আমাদের বাড়ির সামনে বর্ণাালী সংঘ নামে একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন । দীর্ঘদিন তিনি ঐ ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন । ক্লাবের মাধ্যমে তিনি এলাকার মাদকসেবীসহ সকল প্রকার অন্যায় প্রতিরোধে মূখ্য ভূমিকা রাখেন । কিন্তু রাজনৈতিক আক্রোশের কারণে ক্লাবটি ২০০১ সনে বন্ধ হয়ে যায় ।
আমাদের ছোট ভাই মো: শাহাবুদ্দিন মনা ১৯৯০ সনের ৩ মে সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিহত হলে সিরাজ ভাই প্রাণপন আইনী লড়াই করে সন্ত্রাসীদের কয়েকজনের নোয়াখালী জজ কোর্ট থেকে ফাঁসীর রায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন কিন্তু অনেক চেষ্টা করে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ফাঁসীর আদেশ বহাল রাখতে সক্ষম হননি অবশ্য কয়েকজনের যাবাজ্জীবন বিদ্যমান আছে ।
সেজো ভাইয়ের ডাক নাম ছিল বাবলু । নামটি এখন হারিয়ে গিয়েছে । তবে মা আদর করে সংক্ষেপে “বা” বলে ডাকতেন বলে আমরা সবাই তাঁকে “বা” বলে ডাকি । বাহিরে অবশ্য সবাই সিরাজ উকিল বলে জানে ।

No comments:
Post a Comment