লায়ন মো: হাবিবুর রহমান এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
এডভোকেট এ.কে.এম. আমিন উদ্দিন (মানিক)
একজন সাদা মনের সিভিল আইনজীবী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণ রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থেকে শ্রবণকারী, ন্যায়পরায়ণ, নামাজী একজন আইনজীবী ।**************
পিতার নাম মরহুম আলহাজ মো: আজিজুর রহমান, মাতার নাম মরহুমা আলহাজ হাসেন বানু ।************* সাং-৬৬৮, পূর্ব ধোলাইরপাড়, থানা-কদমতলী, ডি.এম.পি; ঢাকা-১২৩৬ ।*************************
জন্ম ১ অক্টোবর ১৯৪৬ সন । জন্ম স্থান কদমতলী থানার অধীনে মুরাদপুর গ্রামে । ৬ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য় । ঢাকার ধনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশু, ১ম ও ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। ’৫৫ সনে গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ৩য় শ্রেণিতে ভর্ত্তি হন । এই স্কুল থেকে ’৬৩ সনে ঢাকা বোর্ডের অধীনে এস.এস.সি পাশ করেন। ’ ৬৫ সনে তৎকালীন কায়দে আজম কলেজ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ’৬৭ সনে জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয থেকে বি.এ. ও ’৭১ সনে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ’ ৭০ সনে সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএল-বি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ’৭০ সন থেকে শ্রম অধিদপ্তরের অধীন ইন্ডাষ্টিয়াল রিলেশন ইনস্টিটিউটে চাকুরীতে যোগদান করে জানুয়ারী ’৭৩ পর্যন্ত চাকুরী করেন। তারপর চাকুরী ছেড়ে ২৬ জুন ’৭৩ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ নেন। ১০ আগষ্ট ’৭৩ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হয়ে আইনপেশা শুরু করেন। ৯ জুন ’৭৯ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে প্র্যাকটিস করার অনুমতি প্রাপ্ত হন। ১৮ মার্চ ’৮৫ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য হন । তিনি ’৭৬ থেকে ’৮০ সন পর্যন্ত ঢাকা জেলা ও দায়রা আদালতে এ.পি.পি ও ’৯৬ থেকে ২০০১ জুলাই পর্যন্ত কোর্ট অব সেটেলমেন্টে এ.জি.পি. হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৬ থেকে ’৮০ সন পর্যন্ত কোন দলীয় নিয়োগ ছিল না ।
তিনি ’৭৬ ও ’৭৭ সনে দুইবার ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য নির্বাচিত হন । ’৯৭-৯৮ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই কমিটিতে সৈয়দ রেজাউর রহমান ছিলেন সভাপতি । ২০০৯-২০১০ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচন করে অল্প ভোটে হেরে যান। সামনে মনোনয়ন পেলে পুনরায় সভাপতি পদে ভোট করতে আগ্রহী এবং সেইভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। ।
তিনি জানান ’৬৯ সনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হলে তাঁর উদ্যোগে যাত্রাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ গঠন করেন । তিনি যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করেছেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পর ৫০ পুরানা পল্টন আওয়ামী লীগ অফিসে বঙ্গবন্ধুর সাথে নিয়মিত দেখা করতেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন, কাছে টেনে নিয়ে আদর করতেন। ’৭১ সনে রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণ মন্ত্রমুগ্ধের মত পুরাটা তিনি নিজে শুনেছেন । বঙ্গবন্ধু বক্তব্য শেষে “জয় বাংলা” ম্লোগান দিযে বক্তব্য শেষ করেছেন বলে এখনো স্পষ্ট স্মরণ আছে । বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে এলাকায় এসে যাত্রাবাড়ি ধনিয়া এলাকায় যুব সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। তিনি যুব সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন । ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কোরপস কোরে অস্র প্রশিক্ষণ থাকার কারণে তিনি নিজেই মুক্তিযুদ্ধের জন্য যুব সংগ্রাম পরিষদের সদস্যদেরকে প্রশ্ক্ষিণ প্রদান করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সরাসরি যুদ্ধে যেতে পারেননি কিন্তু দুই ভাই ও আশেপাশের যুবকদের উজ্জীবিত করে যুদ্ধে পাঠান । শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ গঠিত হলে তিনি আইন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ডেমরা থানা আওয়ামীলীগ গঠিত হলে তিনি আইন সম্পাদক নির্বাচিত হন ।
’৮৭ সনে গঠিত ডেমরা থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের বর্তমান সভাপতি , প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ছিলেন । শ্যামপুর থানা আওয়ামীলীগের কার্য্যনির্বাহি কমিটির সদস্য । বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বার শাখার তিনি সদ্যবিদায়ী সহ-সভাপতি । নতুন কমিটি এখনো প্রদান করা হয়নি। **************************
তিনি ’৯৭ সন থেকে লায়ন ক্লাবের সাথে জড়িত । লায়ন জিলা ৩১৫, এ-২ এর রিজিওনাল চেয়ারপারসন হেডকোয়ার্টার হিসেবে কাজ করছেন । লায়ন’স ক্লাব অব রোজ ভেলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন । দক্ষিণ ধনিয়ায় নিজস্ব জমিতে পিতার নামানুসারে আজিজিয়া জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন । ধোলাইরপাড় জামে মসজিদের সেক্রেটারী ছিলেন ।
তিনি লায়ন সংগঠনের সাথে জড়িত হওয়ার সুবাধে ভারতের দিল্লী, আগ্রা, জয়পুর, কলিকাতা, দার্জিলিং,বেঙ্গলোর, মাদ্রাজ, ওটিতে গিয়েছেন । নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান সফর করেছেন। ’৮৯ সনে নিজে ও ২০০৫ সনে মাকে নিয়ে হজব্রত পালন করেছেন ।
১৮ জানুয়ারী ’৭৪ সনে ঢাকার উত্তরখান নিবাসী শিক্ষক মরহুম আবদুর রব খানের মেয়ে বদরুন্নেছা আন্নীকে বিয়ে করেন । তিনি দুই ছেলের জনক। ১. মো: জামিলুর রহমান লন্ডন থেকে এম.বি.এ. করেছেন। বর্তমানে অষ্টেলিয়ায় লুমিয়া শহরে আলী বাবা এন্ড কোং - এ কর্মরত ও সপরিবারে অষ্টেলিয়ায় বসবাস করছেন। ২. মো: মোজাহিদুর রহমান বি.কম. ধোলাইপাড়ের বিশাল প্রোপার্টি দেখাশুনা করছে । জনাব হাবিবুর রহমান সাহেবের দুই ভাই এস.এম. রইস উদ্দিন ও আবদুর জব্বার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ।
পরিশেষে বলবো তিনি একজন সাদা মনের মানুষ । আইন পেশায় তিনি সবসময় ন্যায়ের পথে ছিলেন । একজন সিভিল আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন । বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একনিষ্ট সেবক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছেন ।
সাক্ষাৎকারটি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ গৃহিত ।

No comments:
Post a Comment