খোন্দকার আবদুল মান্নান এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
এডভোকেট এ.কে.এম.আমিন উদ্দিন
***পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি), জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা। একজন মুক্তিযোদ্ধা আইনজীবী ।***
সাং- গ্রাম+ডাকঘর-নবগ্রাম, থানা-সদর, জেলা- মানিকগঞ্জ,বর্তমানে, ১০৩/১ হৃষিকেশ দাস রোড, থানা- সূত্রাপুর, ঢাকা-১১০০ ।
পিতা বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা মরহুম খন্দকার আবদুল কাদের ও মাতা মরহুমা হাসিনা কাদের । জন্ম ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ খ্রীস্টাব্দ। মানিকগঞ্জের নবগ্রাম প্রাইমারী স্কুলে ৪র্থ শ্রেনি পর্যন্ত পড়েন । ৫ম শ্রেণি থেকে মানিকগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলে পড়েন ও একই স্কুল থেকে ’৬৫ সনে এস.এস.সি পাশ করেন । ’৬৭ সনে ঢাকার বক্সীবাজারে অবস্থিত বর্তমানে মিরপুরে বাংলা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন । ’৭০ সনে একই কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন । ’৭৪ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি পাশ করেন । ১ মার্চ ’৭৬ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে সনদ নিয়ে ৯ মে ’৭৬ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন । তিনি ৭ আগষ্ট ’৭৮ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনপেশার অনুমতি প্রাপ্ত হন এবং ১৬ আগষ্ট ’৮৭ সনে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হন ।
তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে ১৯৯২-৯৩ সনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০০৮-২০০৯ সনে সভাপতি নির্বাচিত হন । ২০০৮ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, বার কাউন্সিলের সদস্য থাকাকালীন চেয়ারম্যান-২নং ট্রাইবুনাল, চেয়ারম্যান- রিলিফ কমিটি, কো-চেয়ারম্যান- পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, সদস্য-নির্বাহী কমিটি ও সদস্য এনরোলমেন্ট কমিটির দায়িত্ব পালন করেছেন ।***************
বর্তমানে ২০০৯ সন থেকে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি.) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন । স্পেশাল পি.পি. হিসাবে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দায়িত্ব পালন করছেন । তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসির রায় কার্যকরী করাসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মামলা পরিচালনা করেছেন ।
রাজনীতিতে মানিকগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদানের মধ্য দিয়ে হাতেখড়ি । চাচা মরহুম এডভোকেট খন্দকার মাজহারুল হক চাঁন মিয়া এম এন.এ ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। চাচার উৎসাহে রাজনীতিতে আসা । বাংলা কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন । মুক্তিযুদ্ধে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মরহুম খন্দকার তফাজ্জল হোসেনের নিকট ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে যোগ দেন । যুদ্ধে স্মরণীয় দিন হলো ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ , এইদিন নবগ্রামের কাছাকাছি সরুপাই এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ১১ জন রাজাকারকে ধৃত করেন এবং বহু গোলাবারুদ, অস্রশস্র দখল করে মুক্তিযুদ্ধের কাজে লাগান ।
জনাব মান্নানের ৫ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে ৪ ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন । তিনি ছিলেন ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড় । পরিবারে মোট ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন । ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান খোকন নায়েমের ডি.জি. ছিলেন । খোকন সাহেব বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের সহপাঠী ছিলেন, তাঁরা ঢাকা কলেজ থেকে একই সাথে মুক্তিযুদ্ধে যায় । খোকন সাহেব বর্তমানে আমেরিকার একটি কলেজে লেকচারার হিসাবে আছে এবং ট্রেক্সাস আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন । মুক্তিযোদ্ধা অন্য দুই ভাইয়ের নাম হলো খন্দকার রফিকুল ইসলাম ও খন্দকার মজিবুর রহমান ।
তিনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সামাজিক সংগঠনে ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন । ঢাকার ফজলুল হক মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি , ঢাকার জাতীয় আইন কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, রাধা গোবিন্দ হাসপাতাল ও দাতব্য চিকিৎসালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ পাবলিক প্রসিকিউটর(পি.পি) এসোসিয়েশনের সভাপতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট(ব্লাস্ট), ঢাকা ইউনিট এর সমন্বয়কারী, বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ঢাকাস্থ মানিকগঞ্জ আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য, ঘাতক-দালাল নির্মূল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ।
তিনি বিভিন্ন সেমিনারে, পর্যটক হিসাবে ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জার্মানী, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ফ্র্যান্স, রাশিয়া, লিবিয়া, কুয়েত, পাকিস্তান সফর করেছেন । ভারতের কলিকাতা, দিল্লী, আগ্রা, বেঙ্গালোর, আজমীর,মহিসূর, মুর্শিদাবাদ, বোম্বেসহ অনেকগুলো অঙ্গরাজ্য । তিনি ও মিসেস কামরুন্নেছা মান্নান ২০০৯ সনে হজ্বব্রত পালন করেছেন ।**************
তিনি ২১ জুলাই ’৭৭ সনে মরহুম শেখ আবদুর রহীমের মেয়ে কামরুন্নেছা মান্নানকে বিয়ে করেন । মিসেস কামরুন্নেছা বি.এস-সি, বি.এড. পাশ করেছেন । বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ও ডিপুটি ডাইরেক্টর পদমর্যাদায় বাংলাদেশ ইসলামিক ফাইন্ডেশনের মহিলা কোর্ডিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন । মরহম শেখ আবদুর রহীম এর পূর্বপুরুষরা পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী ছিলেন । অবশ্য তাদের জন্ম বাংলাদেশে ।
তিনি দুই সন্তানের জনক । ১.ফারহানা মান্নান রুম্পা, এশিয়ান প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয থেকে বিবিএ ও ষ্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয থেকে এমবিএ করেছে । বর্তমানে লালমাটিয়া মহিলা কলেজে প্রভাষক হিসেবে অধ্যাপনারত আছে । স্বামী- শরিফ মোহাম্মদ আলী (সামী) এমবিএ পাশ, একজন ব্যবসায়ী । ২. ড: তানজির মান্নান(রুপন) এলএল.বি (অনার্স) এলএল.এম; লন্ডন থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছে । রুপনের স্ত্রী ব্যারিষ্টার বিলকিস আক্তার মিলি লন্ডন থেকে এলএল.বি(অনার্স) করেছে ।
পরিশেষে বলবো তিনি একজন আদর্শবান আইনজীবী, কঠোর পরিশ্রমী, বিরামহীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শিক্ষা বিস্তারে, সামাজিক উন্নয়নে, ব্লাস্টের মাধ্যমে গরীব জনসাধারণের জন্য বিনা ফিতে মামলা পরিচালনায় এক অবিস্মরণীয় গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ।
সাক্ষাৎকারটি ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ গৃহিত ।

No comments:
Post a Comment