Sunday, 8 November 2015

রিকশাওয়ালা আবদুল রাজ্জাক হাওলাদারের জীবন কাহিনী






আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার




এডভোকেট এ.কে.এম. আমিন উদ্দিন (মানিক)


২৯ জুন ২০১৫ ঢাকাস্থ নোয়াখালী জেলা সমিতির ইফতার, তাই জজ কোর্ট থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরছিলাম। ইফতার অনুষ্ঠিত হবে কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আর আমার বাসা কাকরাইল। বেলা ৩ টায় রিকশায় ওঠলাম। বৃদ্ধ রিকশা চালক । প্রচন্ড রোদ । রোদকে খুব ভয় পাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলাম আপনার বয়স কত ? উত্তরে হিসাব করে বয়স জানালো ৭১ বৎসর। জিজ্ঞাসা করলাম কতদিন রিকশা চালান ? উত্তরে জানালো দেশ স্বাধীনের ২ বৎসর আগে থেকে ঢাকায় রিকশা চালাই, যুদ্ধের সময় পায়ে হেঁটে গ্রামের বাড়ি যাই । তার নাম জিজ্ঞাসা করতে জানালো আবদুল রাজ্জাক হাওলাদার, পিতা মৃত আবদুল আজিজ হাওলাদার, গ্রামের বাড়ি জানালো গ্রাম- ক্ষীরাইপাড়া, পোঃ মাদারীপুর, থানা+ জেলা- মাদারীপুর । তার সংসারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। এখন এক দুই মাস রিকশা চালিয়ে কিছুদিন গ্রামে থেকে আসে। তার হিসাব মতে প্রায় ৪৬ বৎসর রিকশা চালিয়ে আসছেন । বললেন রিকশা চালানো ভাল, আমার বয়সে আপনাদের মত লোকরা হাসপাতালে শুইয়ে আছে। আমি ভাল সুস্থ্য আছি এখনো রিকশা চালাচ্ছি। ভাবলাম লোকটি রিকশা চালাতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠছে, তবু মনোবল কত শক্ত। ৭০ টাকা ভাড়ায় কাকরাইল এসে ২০ টাকা বেশী দিতে চাইলাম, বললো চাচা আপনার ঠক হয়ে যাবে, আপনি বরং আমাকে ১০ টাকা বেশী দেন । আমি তাই করলাম । পরে একটা ছবি ওঠাতে চাহিলে বলেন আবার পুলিশে দিবেন নাতো ? আমি বললাম আরে না আপনার ছবি ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবো। বুঝলাম বুঝে নাই, তবে আমার কাছ থেকে একটা ঠিকানা চাহিল, একটা কার্ড দিলাম । জীবনের এই পর্যায়ে এসেও তার মনোবল ও নীতিবোধ দেখে আশ্চর্য হলাম। অথচ এই গরীবদের টাকা লুটপাট করে আমাদের এক শ্রেণির আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীরা বিদেশে সেকেন্ড হোম নির্মাণ করছেন?

No comments:

Post a Comment