Sunday, 8 November 2015

কোর্ট-কাছারীর হাল-চাল






কোর্ট-কাছারীর হাল-চাল


এডভোকেট এ.কে.এম.আমিন উদ্দিন (মানিক)



আমাার অনেক সহকর্মী বলেছিলেন মানিক ভাই জজ কোর্টের দূর্ণীতিবাজ ষ্টাফদের সম্পর্কে কিছু লিখেন । আসলে ঢাকা জজ কোর্টে আইনপেশায় নিয়োজিত আছি প্রায় ২০ বৎসর। এখানে উপার্জন করে সংসার চালাতে হয়। তাই এখানের ত্রুটি-বিচ্যুতি লিখতে গিয়ে কোন ঝামেলায় পড়ি সেই জন্য লিখা হয় না। ছোটকাল থেকে শুনে আসছি থানার ওসি পাল্টায় কিন্তু থানার দালাল পাল্টায় না ।অনেক আদালতেও একই অবস্থা । নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলো ও বিশেষ জজ আদালতগুলোতে কখনোও ষ্টাফরা বদলী হয় না একই কোর্টে দীর্ঘ সময় থেকে যায়। তারা জেলা জজ সম-মর্যাদার আদালতের ষ্টাফ হওয়ায় তাদের বদলী জেলা জজ সাহেব নাকি করতে পারেন না । মন্ত্রণালয়ের আদেশ দরকার । এছাড়া অন্য আদালতগুলোতে জেলা জজ সাহেব বদলী করলেও এক কোর্ট থেকে অন্য কোর্টে বদলী করতে পারেন মাত্র। তার মানে তারা ঢাকা কোর্টেই থেকে যাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় একই কোর্টে থাকার কারণে সংঘবদ্ধভাবে কিংবা এককভাবে বিভিন্ন দূর্লীতিতে জড়িয়ে পড়েন। জজ সাহেবরা মামলার নথীর হিসাব রাখেন না । রাখেন পেশকার সাহেবরা । অনেক সময় দেখা যায় Contesting মামলা না হওয়ার কারণে অনেক মামলার নথী জজ সাহেবদের সামনে দীর্ঘ সময়েও পেশ করা হয় না । এখানে আসামিদের সাথে ষ্টাফদের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে দূর্ণীতির প্রশ্রয় সৃষ্টি হয়। আইনজীবীরাও এদের কাছে জিম্মি কারণ এরা ঘুরে-ফিরে এক কোর্টে না আরেক কোর্টে আছেই। এদের সাথে বাংলাদেশ সচিবালয়ের ষ্টাফদেরও সুসম্পর্ক হয়ে যায়। কারণ সচিবালয়ের ষ্টাফদেরও কোন বদলী নেই। । অনেক ষ্টাফ বড় অফিসারদেরকেও পাত্তা দেন না। সকালবেলা হাজিরা জমা দিতে গেলে অনেক সময় পেশকার কিংবা তাদের নিয়োজিত উমেদারদের মাধ্যমে বলা হয় এখনো বুন্নি হয়নি। না হলে পরে আসেন। যেন তারা দোকান নিয়ে বসেছেন। তাদের কথায় রাজী না হলে নানাবিধ ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আবার অনেকে বলেন এটা নাকি ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে। দীর্ঘদিন বিচারক পদে চাকুরী করে হয়তো একজন বিচারক ও একজন আইনজীবী দীর্ঘসময় আইনপেশায় নিয়োজিত থেকে সংসার চালাতে হিমশিম খান কিন্তু পেশকার ষ্টাফদের অনেকের ঢাকা শহরে বাড়ি-গাড়ি আছে। এদের নিয়মিত বদলী, শাস্তিমূলক বদলীর ব্যবস্থা করা হলে কিছূটা দূর্ণীতি কমতে পারে ।

No comments:

Post a Comment