Sunday, 8 November 2015

এডভোকেট মুনশী ফখরুল ইসলাম-এর জীবনী
















এডভোকেট মু্নশী ফখরুল ইসলাম


এডভোকেট এ.কে.এম. আমিন উদ্দিন (মানিক)


মুন্শী ফখরুল ইসলাম,এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট । একজন স্পষ্টবাদী ও ন্যায়পরায়ণ আইনজীবী।
পিতা-মরহুম মুন্শী আবদুল ইসলাম, মাতা মরহুম খায়রুন্নেছা, গ্রাম-বাবরখানা,থানা-উজিরপুর,জেলা-বরিশাল। জন্ম-২২ সেপ্টেম্বর ১৯৩৬ খ্রীঃ। স্কুলের রেজিষ্টেশন অনুযায়ী ৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৪০খ্রীঃ । পিতা মধ্যস্বত্ব অধিকারী তালুকদার ও আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন । স্কুলে যাওয়ার পূর্বেই বাবা মারা গেছেন। ১৯৪৫ খ্রীঃ বাবার মুত্যু ও ১৯৫৪ সনের মারাত্মক বন্যার কারণে এবং জমিদারী উচ্ছেদ আইন কার্যকর হওয়ায় অভাব- অনটনের মাধ্যমে পড়াশুনা করতে হয়েছে। তিনি বাবর খানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে( উজিরপুর) ২য় শ্রেণি পর্যন্ত ও সলিয়াবাকপুর এ.কে.ফজলুল হক প্রাথমিক বিদ্যালয় (বানারীপাড়া) থেকে ৩য় থেকে ৪র্থ শ্রেণি এবং ওটরা পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয় (উজিরপুর) থেকে ৫ম শ্রেণি, ১৯৫২-৫৩ সনে চাখার এ.কে.ফজলুল হক ইনস্টিটিউট(বানারীপাড়া) থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন। আগৈলঝরা  ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী(আগৈলঝরা) থেকে ৮ম থেকে ৯ম শ্রেণি, ভিক্টোরিয়া হাই স্কুল( শোলক) থেকে ১৯৫৭ সনে ম্যাট্রিকুলেশন, এ.কে.ফজলুল হক কলেজ(চাখার) থেকে ১৯৬০ সনে ইন্টারমিডিয়েট, তৎকালীন কায়দে আজম কলেজ বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী কলেজ থেকে ১৯৬৪ সনে অটো গ্র্যাজুয়েশন প্রত্যাহার করে জগন্নাথ কলেজ বর্তমান জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সনে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। ’৭২ সনে সেন্ট্রাল ’ল’ কলেজ থেকে আইনে স্নাতক অর্জন করেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ জুলাই পর্যন্ত পটুয়াখালী কালেক্টরেটে চাকুরী করেন। ১৯৬২ থেকে আগস্ট থেকে ১৯৭৩ এর জুন পর্যন্ত এ.জি.ই.পি.. অফিসে লাইব্রেরীয়ান হিসেবে চাকুরী করেন।
তিনি ২৬ জুন ১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ নিয়ে ১ জুলাই ’৭৩ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। ’৭৭ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সনদ নিয়ে ১৯৮৪ সনে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ গ্রহণ করেন।
তিনি ’৫৪ সনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৫৭ সন পর্যন্ত উত্তর বরিশাল জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫৭-৫৯ পর্যন্ত চাখার কলেজ প্রগতি সংঘের(ছাত্র ইউনিয়নের ছদ্মনাম) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। উত্তর বরিশাল সাংস্কৃতিক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সিভিল কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সস্পাদক, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের কোকেপ এর আহবায়ক , ঢাকাস্থ পাকিস্তান কেন্দ্রীয় কর্মচারী –কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধ সহায়ক সমিতির যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন।  পরবর্তী সমাজতান্ত্রিক ভাবে যুব সমাজকে প্রতিষ্ঠিত ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানে যোগ্য করার জন্য ১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ যুব পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন (বর্তমানে অবমুক্ত) ।
জিয়া কর্তৃক পলিটিক্যাল পার্টি ওপেন করার পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য।  স্বৈরাচার বিরোধী  আন্দোলনে মরহুম সামছুল হক চৌধুরীর  নেতৃত্বে  বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতি সমূহের সম্মিলিত  সমন্বয় পরিষদের কার্য্যকরী সদস্য ও পরবর্তীতে যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হন । ১৯৫৪ সনে নিজ গ্রামে ‘ প্রগতি সংঘ’ নামে একটি সমিতি প্রতিষ্ঠা করিয়া স্থানীয় ভাবে ক্রীড়া ,পাঠচক্র সহ সামগ্রিক ভাবে সামাজিক কাজকর্ম করেন। সমিতিটি এখনও পরিচালিত আছে । ১৯৭২ সনে নিজ গ্রামে  বাবর খানা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়  অংশ নেন এবং ভূমি দান করেন । উক্ত বিদ্যালয় যথেষ্ট সুনামের সাথে পরিচালিত হইয়া শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করিতেছে।
তিনি ’ ৬৭ সনে মরহুম কাজী আশরাফ আলী (বরিশাল শহর) এর মেয়ে জেরিনা বেগমকে বিয়ে করেন। জেরিনা বেগম মতিঝিল সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি ১ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। ১.কন্যা- খায়রুজ জাহান, বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক, নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগ,জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়, সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য। ২.পুত্র- আমিরুল ইসলাম (তিতু),সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ৩.পুত্র- মুনশী আনিসুল ইসলাম (সিতু), আই.টি. কর্মকর্তা, ওয়াল্টার এনার্জি ইন্টারন্যাশানাল লিমিটেড, বার্মীংহামসিটি, আলাবামা, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ও সপরিবারে যুক্তরাষ্টে আছে। ৪. পুত্র-মুনশী আতাইয়ে রাসূল আরিফুল ইসলাম রিত গ্রামীন ফোনে উপ-মহাব্যবস্থাপক ওু পরবর্তীতে  উপ-ব্যবস্থাপক,এয়ারটেলে কর্মরত ছিল, বর্তমানে  ‘লেমুনা’ নামে একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও মূখ্য কর্মকর্তা ।
তিনি ঢাকা জজকোর্ট ও হাইকোর্ট কের্ন্দ্রীক দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা পরিচালনা করেন। ১৯৭৫-৭৬ সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্য্যকরী পরিষদের সদস্য ও ১৯৯০-৯১ সনে সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি একজন স্পষ্টবাদী ও ন্যায়পরায়ণ আইনজীবী, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবসময় সোচ্চার। ১৯৭৮ বৎসর বয়সেও তিনি নিয়মিত কোর্টে যান এবং জন নেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত সকল কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন।
নিজের ছেলে-মেয়েদেরকে মানুষ করার পাশাপাশি ভাইয়ের ছেলে মেয়ে এবং আত্মীয় স্বজনকে সহায়তা করেছেন। আমি তাঁকে খুব কাছাকাছি দেখার সুযোগ পেয়েছি। যত দেখেছি তত তাঁর স্পষ্টবাদীতায় মুগ্ধ হয়েছি । আমি তাঁর সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। সাক্ষাৎকারটি ২৩ জুন ২০১৪ গ্রহণ করা হয় ।

No comments:

Post a Comment